কিশোরগঞ্জে প্রতিনিধি.
জেলার ভৈরব উপজেলায় ভুল চিকিৎসায় গৃহিণীর মৃত্যুর অভিযোগে ১১ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন মৃতের স্বামী। অপরদিকে রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা হাসপাতাল ভাঙচুর করলে পাল্টা মামলা করেছেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদিরুজ্জামান বদি। সোমবার (১০ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় মৃত সেলিনা বেগমের স্বামী আক্তার মিয়া ভুল চিকিৎসায় হত্যার অভিযোগ এনে হাসপাতাল পরিচালক বদিরুজ্জামান বদিকে প্রধান আসামি করে ও চিকিৎসক ডা. ফাহিমা শারমীন হানীর নামসহ আরও ৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। অন্যান্য আসামিরা হলেন, সজিব ঘোষ, মুনমুন, বন্যা ও কবিতা।
এই মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৭ জুলাই) দুপুরে নিউ টাউন এলাকার গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালে জরায়ু অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয় সেলিনা বেগমকে। ডা. ফাহিমা শারমীন হানী বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা করে ওইদিন দুপুর ২টার দিকে জরায়ু অপারেশনের জন্য তাকে ওটিতে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় অপারেশন থিয়েটার থেকে অজ্ঞান অবস্থায় বের করেন। পরে রক্তশূন্যতা দেখা দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রাত ১০টার পর অবস্থা বেশী অবনতি হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখনও স্বজনদের রোগীর সমস্যার কথা কিছু বলেনি। রাত সাড়ে ৩টার দিকে রোগীর মৃত্যুর পর তাদেরকে কোনো ছাড়পত্র না দিয়ে তড়িঘড়ি করে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বলে। পথিমধ্যে সন্দেহ হলে নরসিংদী জেলার বারৈচা গ্রীন লাইন হাসপাতালে গেলে তারা রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়।
মামলার বাদী সেলিনা বেগমের স্বামী আক্তার হোসেন বলেন, আমার স্ত্রীকে তারা ভুল চিকিৎসায় মেরে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে সেলিনা বেগমের মৃত্যুর খবর শুনে স্বজনরা শনিবার সকালে হাসপাতাল ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদিরুজ্জামান বদি বাদী হয়ে নিহত সেলিনা বেগমের স্বামী আক্তার মিয়াকে প্রধান আসামি করে আরও ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০-৩০ জনের নামে ভৈরব থানায় মামলা করেন। চিকিৎসক ডা. ফাহিমা শারমিন হানী জানান, রোগীর অপারেশন ভুল হয়নি, তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, সোমবার দিবাগত রাতে উভয় পক্ষ পৃথক দুটি মামলা করেছে। এ বিষয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তদন্তের কাজ করছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।