নিজস্ব প্রতিবেদক:
সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের দাম আরও বেড়েছে। বোতলজাত সয়াবিনের দাম প্রতি লিটারে ২ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতলে ১০ টাকা বেড়েছে। পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও বেড়েছে। এ ছাড়া ময়দা ও আদার দামও বাড়তি। তবে চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কমেছে। ১০ টাকা কমে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজ এখন ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
দৈনন্দিন রান্নায় ব্যবহৃত সয়াবিন তেলের লাগাম ছাড়া দামে অস্বস্তিতে রয়েছেন সাধারণ ভোক্তা। একইভাবে তেলের এমন দামে বিব্রত খুচরা বিক্রেতারাও। কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের ঢাকা জেনারেল স্টোরের ব্যবসায়ী মো. মুজাহীদ বলেন, বিগত পাঁচ-দশ বছরেও সয়াবিন তেলের দাম এত বাড়তে দেখিনি। কোম্পানির পক্ষ থেকেই দাম বাড়ানো হয়েছে। দাম বেশি হওয়ায় এখন অনেক কোম্পানির বোতল তেল বিক্রি করছি না। এত দাম শুনলে ক্রেতারা রেগে যাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে তুলনামূলক কম দামের কোম্পানির তেল দোকানে রাখছি। এ ছাড়া বাজারে খোলা সয়াবিন তেলে কেজি ১২২ টাকা এবং পাম অয়েলের কেজি ১০২ টাকা হয়েছে। সব মিলিয়ে সয়াবিন তেলের বাজার এখন অনেক চড়া।
বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, দাম বাড়ার একটা সীমা থাকা উচিত। এত দাম দিয়ে বোতলের তেল কেনা যায়! গরিব মানুষ যে খোলা তেল কিনে খাবে, সেটারও দাম অনেক বেড়েছে। বাজারে যখন কোনো পণ্যের দাম বাড়ে, তখন তা রেকর্ড না ভেঙে থামে না। বাজার দর নিয়ন্ত্রণে কি কেউ নেই। এটা কি মগের মুল্লুক।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে এখন এক লিটার বোতলের দাম উঠেছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। কয়েক মাস আগেও যা ছিল ১০৫ টাকা। বড় বাজারগুলোয় গত সপ্তাহে পাঁচ লিটারের যে বোতল বিক্রি হয়েছিল ৬২০ টাকায়, সেই বোতল চলতি সপ্তাহে দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৩০ টাকায়। অর্থাৎ লিটারে অন্তত ১০ টাকা বেড়েছে। এলাকার মুদির দোকানগুলোয় আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তিন সপ্তাহ আগেও এ তেল পাওয়া গেছে ৫৯০ থেকে ৬০০ টাকায়।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবেই গত এক সপ্তাহে খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ১৯ শতাংশ। খোলা পাম ওয়েলের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। পাঁচ লিটার সয়াবিনের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
বাজারে খোলা ময়দার দামও বেড়েছে। খোলা ময়দার দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকায়। সপ্তাহখানেক আগেও বিক্রি হয়েছে ৩৬ টাকা কেজি। এদিকে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে আমদানিকৃত আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। হলুদের দাম কেজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। দুই সপ্তাহ আগে যা ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। টিসিবির হিসাবেও, গত এক সপ্তাহে হলুদের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
চালের বাজার আগের মতোই চড়া রয়েছে। বাজারে সরু চালের কেজি এখন ৬২ থেকে ৬৮ টাকা এবং মাঝারি চালের দাম প্রতিকেজি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। অন্যদিকে গরিবের মোটা চালের দাম আগের মতোই ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি।
চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজের ঝাঁজ কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে যা ৪০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। কারওয়ান বাজারের পাইকারি প্রতিষ্ঠান লাকসাম বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, বাজারে হঠাৎ দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেলে দাম বেড়ে গিয়েছিল। তবে এখন তা আবার স্বাভাবিক হচ্ছে। পাইকারিতে এখন প্রতিকেজির দাম পড়ছে ২৫ থেকে ২৬ টাকা পর্যন্ত।
নতুন আলুর দামও কমেছে। গত সপ্তাহে ২০ টাকায় বিক্রি হওয়া আলু এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে।
Leave a Reply