নিজস্ব প্রতিবেদক:
একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয় ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি।
এইদিনে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে তার মোঘলটুলির বাসভবনে পূর্ববঙ্গ কর্মশিবির অফিসে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় একুশে ফেব্রুয়ারি হরতালের পাশাপাশি রাষ্ট্রভাষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
একইসঙ্গে ১১ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি পতাকা দিবস পালনেরও সিদ্ধান্ত নেন আন্দোলনকারীরা। তবে ১২ ফেব্রুয়ারি কোন কর্মসূচি না থাকলেও টানা তিনদিন ধরেই চলে এ কর্মসূচি। (জাতীয় রাজনীতি: ১৯৪৫ থেকে ৭৫; অলি আহাদ; ঢাকা)
৪ ফেব্রুয়ারির প্রতিবাদ মিছিলে আন্দোলনের যে গতি সঞ্চার করে তারই রেশ থেকে ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা ছিল প্রচণ্ড ব্যস্ত। একুশে ফেব্রুয়ারির হরতাল সফল করতে ছাত্র নেতাদের ব্যস্ততা আরো বেড়ে যায়। আন্দোলন কর্মসূচি সফল করতে জনসংযোগ ও অর্থ সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এরই অংশ হিসেবে ১১ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পতাকা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
ভাষা সংগ্রামী গাজীউল হক তার স্মৃতিকথনে উল্লেখ করেন, ওই দুদিনে অর্থ সংগ্রহের ব্যবস্থাও করা গেল। দুদিন ঢাকার বুকে ও নারায়ণগঞ্জে সাফল্যের সঙ্গে প্রতিপালিত হয়। অর্থ সংগ্রহই মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল না। ওই দিন দুটিতে যে অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল তা যৎসামান্য, ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতিলগ্নে এটা একটা চমৎকার পদক্ষেপ বলা যেতে পারে। এ পতাকা দিবসকে লক্ষ্য করে আরো নতুন নতুন কর্মী ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। সে সময় ৫০০ পোস্টার লেখানোর দায়িত্ব দেয়া হলো নাদিরা বেগম এবং ডা. সাফিয়াকে। নাদিরা বেগম এবং ডা. সাফিয়া তাদের বান্ধবী ও অন্যান্য ছাত্রী নিয়ে পোস্টার লেখার ব্যবস্থা করেন। (ভাষার লড়াইয়ের তুঙ্গ মুহূর্তগুলো: গাজীউল হক)
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের এ বিস্ফোরণকালে প্রতিদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল একুশে ফেব্রুয়ারি। পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন তারা। বিস্ফোরণের এ উৎসমুখও প্রায় ছয় বছর আগে তৈরি করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক-ছাত্র।
Leave a Reply