নিজস্ব প্রতিনিধি:
১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হয় হবিগঞ্জ। মাঝখানে কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। কিন্তু আজও এখানে কোনো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। অবশেষে এই আক্ষেপের অবসান হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সামনে রেখে ফেব্রুয়ারিতেই শুরু হয়েছে হবিগঞ্জে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণকাজ।
জেলা কালেক্টরেট ভবনসংলগ্ন এ মিনারটি জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে। নবনির্মিত শহীদ মিনারেই এবারের একুশে ফেব্রুয়ারি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে এর শুভ উদ্বোধন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।
ইতোমধ্যে গত বুধবার হবিগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাইলিং শুরু হয়। এর আগে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির।
ডিসি কামরুল হাসান বলেন, হবিগঞ্জ জেলা সদরে একটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কারণ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার স্থানীয় বৃন্দাবন কলেজের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতেন। প্রতিবছরই নানা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতো। এ চিন্তা থেকে আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে জেলা সদরে একটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নিই।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের সূচনালগ্নে গত ১৭ মার্চ হবিগঞ্জে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্প এবং এলআর ফান্ড থেকে প্রাথমিক অবস্থায় ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটি নির্মাণের জন্য মোট ১৬ থেকে ১৮ লাখ টাকা প্রয়োজন। কাজেই বাকি অর্থের জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা একদিনের বেতন দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তির কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রত্যাশা করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও বৃন্দাবন সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, ষাটের দশকে স্থানীয় বৃন্দাবন সরকারি কলেজে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলে। স্বাধীনতার পর পরই তৎকালীন ছাত্র সংসদের উদ্যোগে এটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। ওই শহীদ মিনারেই জেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছিলেন। দীর্ঘদিন পর হলেও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মিত হচ্ছে। এটি খুবই ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ
Leave a Reply