আন্তর্জাতিক ডেস্ক.
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাসভবন ‘মার-আ-লাগো’ থেকে গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ১১ সেট গোপন নথি উদ্ধার করেছে এফবিআই। উদ্ধারকৃত এসব নথির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাহিনী সম্পর্কিত ‘টিএস/এসসিআই’ বা ‘অতি গোপনীয়’ ক্যাটাগরি নথিও রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা এফবিআই।
শনিবার আল- জাজিরা ও বিবিসি’র প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
গত ০৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের পাম বিচ শহরে ট্রাম্পের বাসভবন মার-আ-লাগোতে তল্লাশি চালায় এফবিআইয়ের একটি দল। অভিযানে ট্রাম্পের বাসভবন থেকে কিছু জিনিসপত্র ও বিভিন্ন নথি জব্দ করেছিল এফবিআই।
গত বছরের জানুয়ারিতে দায়িত্ব শেষে হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময় ট্রাম্প অবৈধভাবে নথিপত্র সরিয়ে নিয়েছেন কি না, সেই তদন্তেরই অংশ হিসেবেই সোমবার তল্লাশি চালানো হয় মার-আ-লাগোতে। মার্কিন বিচার বিভাগের সন্দেহ ছিল, ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউস ত্যাগের সময় কিছু অতি গোপন নথি সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে ফ্লোরিডার একটি আদালতের নির্দেশে জব্দকৃত জিনিসের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
বিবিসি প্রতিবেদনে জানা যায়, মার-আ-লাগো থেকে প্রায় ২০টি বাক্স ভরে জিনিসপত্র জব্দ করে এফবিআই। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফটো বাইন্ডার, ‘ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট’ সম্পর্কে লেখা একটি নথি উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও ওই নথিতে কী বলা হয়েছে তা স্পষ্ট জানা যায়নি। এছাড়া ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক পরামর্শদাতা রজার স্টোনের পক্ষে লেখা একটি ক্ষমাপত্রও পওয়া যায়।
ট্রাম্পের বাসভবন থেকে উদ্ধার ১১ সেট নথি কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে এএফবিআই। মধ্যে ৪ সেট ‘অতি গোপন’ ক্যাটাগরি, তিন সেট ‘গোপন’ ক্যাটাগরি নথি, এবং তিন সেট ‘গোপনীয়’ ক্যাটাগরির নথি রয়েছে। এসবের মধ্যে একটি সেট মার্কিন নিরাপত্তা ব্যাবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং ‘টিএস/এসসিআই’ বা ‘অতি গোপন/ সংবেদনশীল’ তালিকাভূক্ত বলে জানা গেছে। এফবিআইএর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই নথি যদি বেহাত হলে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গুরুতর হুমকির মুখে পড়বে।
এফবিআই’র এই তালিকার প্রতিাক্রয়ায় ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক বিবৃতিতে বলেছেন, উদ্ধারকৃত নথিগুলো ‘সব ডিক্লাসিফাইড’ এবং নিরাপদে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, এফবিআই যদি চাইত, তাহলে যে কোনো সময় এসব নথি পেতে পারত। আমিই তাদেরকে হস্তান্তর করতাম। পরোয়ানা নিয়ে তল্লাশি চালানোর কোনো প্রয়োজন ছিল না।
ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা বার্তায় ট্রাম্প লিখেছেন, আমি নথি প্রকাশের বিরোধিতা করব না বরং আমি সেই নথিগুলো অবিলম্বে প্রকাশকে উৎসাহিত করে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে ট্রাম্পের বাসভবনে এফবিআইয়ের অভিযান ঘিরে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় উঠেছে। রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতারা বিচার বিভাগ ও এফবিআইয়ের কঠোর নিন্দা করেছেন। আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতায় জিতলে অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড সহ বিচার বিভাগ তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে ট্রাম্প তাকে ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়ার জন্য একটি রাজনৈতিক আক্রমণ হিসাবে চিত্রিত করেছেন।