তোলপাড় নি্জউ ডেস্ক :
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে যে সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে, তা জনগণের প্রত্যাশিত কমিশন গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সে নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেবে বলে মনে করেন দলটির নেতারা।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সার্চ কমিটির সদস্যরা হলেন—হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহরাব হোসাইন, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে কতটুক সফল হবে, জানতে চাইলে ইতিবাচক প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘যোগ্য এবং সঠিক ব্যক্তিদের নিয়েই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করবে বলে সবার প্রত্যাশা।’
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি যে সার্চ কমিটি গঠন করেছেন, তা নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী একটি ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, যে নির্বাচন কমিশন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ইসি গঠন আইন অনুযায়ী, সার্চ কমিটিতে সাংবিধানিক পদধারীদের এবং একজন নারীসহ সুশীল সমাজের দুজনকে রাখা হয়েছে। তারা যে গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে অতীতে ভূমিকা রেখেছেন, তা সবাই স্বীকার করবেন।’
‘আমি মনে করি, সুন্দর একটি সার্চ কমিটি হয়েছে। তাদের মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশনের দ্বারা বাংলাদেশে একটি সুন্দর জাতীয় নির্বাচন হবে, যেমনটি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে হয়েছে’, বলেন তিনি।
সার্চ কমিটির ওপর পূর্ণ আস্থা রাখছেন দলের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার সরকার শেষ পর্যন্ত জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিমত অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার গঠনে আইন করেছেন। সে অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি যে সার্চ কমিটি গঠন করেছেন, আমি মনে করি, এটা তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘৫০ বছর পর হলেও শেখ হাসিনার সরকারের ইসি গঠনে আইন করার সাহসী উদোগ ও পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই। সংবিধানের আলোকে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, সেটি হবে সংবিধানের আইনে গঠিত হওয়া কমিশন।’
‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য নতুন যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে, তা অতীতের যেকোনো ইসির চেয়ে বেশি শক্তিশালী হবে। সেটা মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি’, বলেন নাছিম।
সংসদ প্রণীত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনের বিধান অনুযায়ী এবার সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এ সার্চ কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যপ্রণালী সম্পন্ন করবে। সেই সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্চ কমিটির কার্য সম্পাদনের প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দেবে।
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। শনিবার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গঠিত সার্চ কমিটি আইন অনুযায়ী তাদের সুপারিশ চূড়ান্ত করতে ১৫ দিন সময় পাবে। ফলে, নতুন কমিশন গঠনে বর্তমান কমিশনের মেয়াদের পরেও সময় থাকছে সার্চ কমিটির।