নিজস্ব প্রতিবেদক
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের এইচআইভি সেন্টারের তথ্যমতে, জেলায় মোট ২৫৫ জন পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ইনজেকটিভ ড্রাগ ব্যবহারকারী ১৮৭ জন, কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ২৯ জন, সাধারণ ৩৫ জন এবং যৌনকর্মী ৪ জন। এ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২৬ জন। এবং নিশ্চিতভাবেই এই তথ্য আমাদের অশনিসংকেত দিচ্ছে।
অনেকে জেনে, আবার অনেকে না জেনেই নেশাজাতীয় ইনজেকশন ব্যবহারের সময় একই সিরিঞ্জ শেয়ার করছে একাধিক ব্যক্তি। ফলে এক জনের দেহে থাকা এইচআইভি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে অন্যের শরীরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সমাজের নিম্নআয়ের মানুষদের মধ্যেই এ প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে।
সংক্রমণের হার এতো ভয়াবহ হলে প্রতিরোধ এবং প্রতিকার হিসেবে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন জানতে চাইলে স্থানীয় চিকিৎসক জানান, তারা নিয়মিত ফ্রি চিকিৎসা, ওষুধ আর কাউন্সিলিং দিচ্ছেন। অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে এখন ভালো আছেন।
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুন নাহার বলেন, ‘সমাজের নিম্নআয়ের মানুষরাই বেশি ইনজেকটিভ ড্রাগ শেয়ারিং করে ব্যবহার করছেন। ফলে এদের মধ্যেই বেশি এইচআইভি পজেটিভ পাওয়া যাচ্ছে। তবে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি তাদের মনোবল বাড়ালে কাউনসিলিং করা হচ্ছে।’
তবে ইনজেকশনে ড্রাগ ব্যবহার কমাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে বলেও জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি, গত দুই বছরে প্রায় ১৯০০ ইনজেকটিভ ড্রাগ জব্দ করা হয়েছে।’
এখন প্রশ্ন হলো এইচআইভি বা এইডস আসলে কী? এইচআইভি অর্থ- Human Immunodeficiency Virus, যা মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধ্বংস করে দেয়। যখন ভাইরাসটি শরীরে অনেক দিন ধরে সক্রিয় থাকে, তখন এটি রূপ নেয় এইডস (Acquired Immune Deficiency Syndrome)-এ।
কীভাবে ছড়ায়?
একই সিরিঞ্জ একাধিকবার ব্যবহার থেকে, অনিরাপদ যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে, মায়ের দেহ থেকে শিশুর দেহে সংক্রমণ এবং রক্তদানের সময় সঠিকভাবে পরীক্ষা না করা রক্ত থেকে। তবে এটা হাত মেলানো, খাবার ভাগাভাগি, বা পাশে বসে থাকা থেকে ছড়ায় না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, একবার কোনো এলাকায় এইচআইভি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে তা দ্রুত সম্প্রসারিত হয়, বিশেষ করে যেখানে সচেতনতা ও প্রতিরোধ কম।
একজন সংক্রমিত ব্যক্তি চিকিৎসা না নিলে অনেকে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তাই সময়মতো পরীক্ষা, চিকিৎসা আর সচেতন আচরণ; এসবই হতে পারে এই ভয়াবহ ভাইরাসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ।

 
                    







 
                                     
                                     
                                    








