তোলপাড় ডেস্ক.
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘাতের পর আজ কলেজ ক্যাম্পাস এবং ছাত্রাবাসগুলোতে অদ্ভূত এক নীরবতা বিরাজ করছে।
কালও যে প্রাঙ্গণে ছিলো আগুনের উত্তাপ আজ সেখানে সুনশান নিস্তব্ধতা। সকালের আকাশ কালো করে আসা বছরের প্রথম কালবৈশাখী আর শীতলতার বৃষ্টি যেন নীরবতার চাদরে মুড়ে দিয়ে গেছে দেশের নানা ইতিহাসের সাক্ষী ঢাকা কলেজকে।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সংঘর্ষের শুরু, মাঝরাত পর্যন্ত চলে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সড়ে দশটার দিক থেকে আবারও দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। সারাদিন ব্যাপী চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সাংবাদিক আর সাধারণ মানুষসহ আহতের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে অর্ধশতাধিক। সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে কুরিয়ার সার্ভিসে কাজ করা এক ডেলিভারী ম্যান।
মঙ্গলবার সংঘর্ষের পর ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। ছাত্রদের নির্দেশ দেয়া হয় হল ছাড়তে। কিন্তু ছাত্ররা হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে। ছাত্ররা যে কোনো মূল্যে হলে অবস্থান করার কথা জানায়।
আজ সকালে কলেজের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের ছাত্রাবাসগুলো খোলাই রয়েছে। আর পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ছাত্ররা ছাত্রাবাসের ভেতরেই অবস্থান করছে। তবে আজ কলেজ প্রাঙ্গণ বা ছাত্রাবাস বা রাজপথ কোথাওই কোনো উত্তাপ নেই, বরং আছে এক সুনশান নীরবতা।
নিউমার্কেট এলাকার সড়কও আজ সকাল থেকে ছিলো শান্ত, নীরব দর্শকের ভূমিকায়। সংঘর্ষের জড়ানো দুই পক্ষের কাউকেই দেখা যায়নি নিউমার্কেট-নীলক্ষেতের সড়কগুলোতে। সকাল থেকেই স্বাভাবিকভাবেই যান চলাচলও শুরু করছে ওই সড়কে। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (উপাধ্যক্ষ) এ টি এম মইনুল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কলেজের ছাত্রাবাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেটিই আমরা ছাত্রদের জানিয়েছি। তবে ছাত্ররা ছাত্রাবাস ছাড়তে চাই না। পাশাপাশি ছাত্ররা হামলাকারীদের বিচার দাবিও করছে। বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, তারা যে সিদ্ধান্ত নিবে সেটিই চূড়ান্ত।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি, প্রশাসনিক পদক্ষেপ বা কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পরে আলোচনা করে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।